জঙ্গল সলিমপুর: দুর্গম পাহাড়ে দুর্ভেদ্য সাম্রাজ্য
Encrypting your link and protect the link from viruses, malware, thief, etc! Made your link safe to visit.
সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের কয়েকশ একর এলাকায় গত এক যুগ ধরে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে ৪০ হাজার মানুষের অবৈধ বসতি।
‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদে’র নেতৃত্বে সরকারি খাস জমিতে গড়ে তোলা এই ঝুঁকিপূর্ণ বসতি এখন পরিণত হয়েছে ছিন্নমূলের ‘দুর্ভেদ্য সাম্রাজ্যে’।শুক্রবার ভোরে জঙ্গল সলিমপুরের ১ নম্বর সলিমপুর ওয়ার্ডের বিবিরহাট এলাকায় পাহাড় ধসে তিন শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হলে বহুদিন পর ওই এলাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের পা পড়ে।
এর আগে গত এক দশকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলাকালে এবং ছিন্নমূলের আমন্ত্রণ ছাড়া সংবাদকর্মীরা ওই এলাকায় ঢুকতে পারেননি।
প্রশাসনিক কাঠামোতে জঙ্গল সলিমপুরের অবস্থান সীতাকুণ্ড উপজেলার আওতায় হলেও ওই এলাকায় প্রবেশ করতে হয় চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার বাংলাবাজার এলাকা দিয়ে।
বাংলাবাজার এলাকা থেকে গর্তে ভরা সড়ক ধরে চার কিলোমিটার পর্যন্ত যাওয়া যায়। এরপর ডান দিকে নেমে গেছে পাহাড়ি মাটির পথ।
ওই উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ ধরে এক কিলোমিটারের মত এগোলে দেখা মিলবে ছিন্নমূলের বসতির। রাস্তার দু’পাশে গড়ে উঠেছে আধাপাকা মাদ্রাসা ও টিনের ঘর। খালি প্লটে জমির ‘মালিকের’ নাম লেখা ছোট ছোট বহু সাইনবোর্ড চোখে পড়ে।
এই পথ ধরে আরও এক কিলোমিটার গেলে একটি লোহার তোরণে পৌঁছানো যায়। সেখানে দেখা যায় সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা সম্বলিত ব্যানার টাঙানো।
২০১০ সালের জুনে এই লোহার তোরণের জায়গায় একটি পাকা গেইট ছিল। ওই সময় দুইবার সেখানে গিয়ে ছিন্নমূলের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীরও দেখা মিলেছিল।
তোরণ পেরিয়ে আধা কিলোমিটারের মতো এগিয়ে গেলে একটি মসজিদ ও মাঠ। আশেপাশে দোকানপাট; এটি ছিন্নমূলের বাজার এলাকা।
বাজার থেকে সোজা একটি এবং বাঁয়ে আরেকটি সড়ক চলে গেছে। বাঁ পাশের সড়কটি ধরে এগোলে পড়বে এস এম পাইলট স্কুল।
চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদের বর্তমান সভাপতি গাজী সাদেকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মশিউর রহমান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মশিউর বলেন, সমিতির সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ১৫ হাজার। আট হাজার পরিবারে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস সেখানে। পুরো এলাকাকে ১১টি ‘সমাজে’ ভাগ করা হয়েছে ব্যবস্থাপনার সুবিধার জন্য।
দেশের প্রায় সব জেলার মানুষই এখানে আছে। অধিকাংশ রিকশাচালক, ঠেলাগাড়ি চালক, দিনমজুর, হোটেল বয় ও গার্মেন্টম শ্রমিক।
মশিউর জানান, তাদের ওই এলাকার ভেতরে ১২টি মসজিদ, চারটি মাদ্রাসা, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, তিনটি কেজি স্কুল, তিনটি এতিমখানা, ছয়টি কবরস্থান, পাঁচটি মন্দির, দুটি কেয়াং, একটি গির্জা, একটি শ্মশান এবং একটি কাঁচা বাজার আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সমিতির সদস্যপদ নিতে হয় ১৫০ টাকা দিয়ে। পরে সমিতিকে টাকা দিয়ে পাহাড়ের ভেতরে একেক খণ্ড জমির দখল নিয়ে ঘর তুলেছেন তারা।
এভাবে অবৈধ বসতি স্থাপনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী মশিউর বলেন, এখানে সবাই নিঃস্ব, নদীভাঙা দরিদ্র মানুষ। ২০০৪ সাল থেকে তাদের এই বসবাস শুরু হয়েছে।
“২০০৬ সালে একবার সরকারি এই জমির বন্দোবস্তি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালে ছয়শ একর জমির বন্দোবস্ত চেয়ে আবার আবেদন করি। সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন বন্দোবস্তের পক্ষে মত দিয়ে একটি প্রতিবেদনও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছিল।”
পাহাড়ে এই অবৈধ বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০০৪ সালে একাধিক পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ২০১০ সালে স্থানীয় লাল বাদশা ও আলী আক্কাসের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ওই এলাকায় যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সংবাদকর্মীরা। ২০১০ সালের ২৩ মে র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ আলী আক্কাস নিহত হন।
সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম ভুঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জঙ্গল সলিমপুরে অধিকাংশ পরিবারই অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এরকম পরিবারের সংখ্যা কমবেশি ১০ হাজারের মতো।”
এই ঝুঁকির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সংগ্রাম পরিষদের মশিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার ধসের পর সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ১৮টি পরিবারকে এস এম পাইলট স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।
আর জমি বন্দোবস্তের আবেদনে উপজেলা প্রশাসনের সমর্থনের যে দাবি তিনি করেছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “সরকারি জমি এভাবে বন্দোবস্ত দেওয়ার সুযোগ নেই। এটা তাদের মনগড়া বক্তব্য। ”
‘আক্কাস-পর্ব শেষ, এখন ইয়াসিন’
জঙ্গল সলিমপুরে বসতি স্থাপনের কোনো বৈধতা নেই জানিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, ওই এলাকা থেকে বসতি স্থাপনকারীদের সরানো দরকার।
পাহাড় ধসের পর শুক্রবার দুপুরে ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এসব পাহাড় বসবাসের উপযোগী নয়। কিন্তু মানুষ অবৈধভাবে ঘর তুলে তুলে চূড়ায় চলে গেছে।
“এখানে হাজার হাজার পরিবার, কোনো বৈধতা নেই। তারা দেখছে- ঘর বানালে, বসবাস করলে কোনো বাধা নেই; এজন্যই এটা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে গেছে। এর স্থায়ী সমাধান দরকার।”
জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, “এটা বসবাসের জায়গা না। গ্রাম বানানো, বাজার-শহর বানানোর জায়গা না। এখানে বিদ্যুৎ আসার কথা না, কিন্তু এসেছে।
“এখানে থাকলে তারা বাঁচবে- এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। তারা মারা যেতে পারে। তাদের বাঁচানোর জন্যই এখন সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের সরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সেটা আমরা একা পারি না। সরকারি এবং স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
অবৈধ বসতি স্থাপনে পৃষ্ঠপোষকতাকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, “আক্কাসের (আলী আক্কাস) ইতিহাস আপনারা জানেন। আক্কাসের পর্ব শেষ হয়েছে, এখন আরেক পর্ব এসেছে- ইয়াসিন। লোকে বলে- সে কোথায় থাকে, তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
“এভাবে একেক সময় একেক জন হাজির হবে। নেপথ্যে থেকে এগুলো করাবে। আমাদের উচিৎ তা করতে না দেওয়া।”
ইয়াসিনের বিষয়ে জানতে চাইলে সংগ্রাম পরিষদের মশিউর বলেন, “সে আমাদের কেউ না। সেটা আলীনগর এলাকা। সলিমপুর পেরিয়ে যেতে হয়। সেখানে আমাদের চেয়েও বড় পাহাড়।”
Link will be apear in 15 seconds.
Well done! you have successfully gained access to Decrypted Link.
Casinos Near Casino, Philadelphia - Mapyro
ReplyDeleteFind Casinos Near Casino, 안양 출장마사지 Philadelphia, PA near you on MapYRO, 천안 출장샵 the 바카라 시스템 배팅 world's biggest community for 안양 출장안마 real-time driving directions, reviews and 시흥 출장샵 information.